বিডিনিউজপ্রতিদিনঃ ৩ নভেম্বর ১৯৭৫ সনে সংঘঠিত ইতিহাসের নির্মম, বর্বরোচিত ও নৃশংসতম ‘জেল হত্যা দিবস’ স্মরণে বঙ্গবন্ধু পরিষদের উদ্যোগে আজ ৩ নভেম্বর ২০২০, মঙ্গলবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের (আব্দুস সালাম হল) কনফারেন্স লাউঞ্জ (৩য় তলায়) এক আলোচনা সভা বঙ্গবন্ধু পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম এর সভাপতিত্বে ও কন্দ্রেীয় নেতা মতিউর রহমান লাল্টুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ছাদেকুল আরেফিন, জাতীয় সংসদ সদস্য ও প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ শফিকুর রহমান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ জাকারিয়া মিয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মোঃ ফিরোজ আহমেদ, বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা ও বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. লিয়াকত হোসেন মোড়ল, বিশিষ্ট কবি ও সংগঠক এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল মতিন ভূইয়া, নেপালের সাবেক রাষ্ট্রদূত ও সংগঠক ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক, সাংবাদিক ও লেখক অজিত সরকার, কুষ্টিয়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাহবুব আরেফিন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. আশরাফুল আলম ও ভুগল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ আব্দুল কাদের প্রমুখ।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ছাদেকুল আরেফিন বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড ও ৩ নভেম্বর জেল হত্যাকান্ড একই সূত্রে গাঁথা। বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার হত্যাকান্ডের মাধ্যমে এদেশে পাকিস্তানী ভাবধারার শাসন প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিল ৭১’র পরাজিত শক্তি, ধর্মান্ধ শক্তি এবং আন্তর্জাতিক চক্রান্তকারীরা। বঙ্গবন্ধু হত্যার মাধ্যমে এদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শকে জলাঞ্জলি দেয়ার চক্রান্ত হয়েছিল। স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করার অপচেষ্টা হয়েছে। ৩ নভেম্বর জেল খানার অভ্যন্তরে জাতীয় চার নেতাকে নির্মমভাবে হত্যার মাধ্যমে খুনী মোসতাক ও অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান এদেশে হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতির বীজ রোপন করেন। জেল খানা নিরাপদ স্থান, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে খোন্দকার মোসতাক ও জিয়াউর রহমানের ষড়যন্ত্রে ও নির্দেশে খুনী চক্র কারা অভ্যান্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী জাতীয় বীর, চার জাতীয় নেতাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। যা এই হত্যাকান্ড বিশ্ব ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা। জাতীয় চার নেতা জীবন দিয়েছেন কিন্তু জাতির পিতার রক্তের সাথে কোনদিন বেইমানী করেননি। মহান মুক্তিযুদ্ধে এই চার জাতীয় নেতার আত্মত্যাগ ও অবদান আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাসে চির অম্লান, চির ভাস্কর ও চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে। জাতি চিরদিন তাদের আত্মত্যাগ শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। জাতীয় চার নেতার রক্তের ঋণ কোনদিনই শেষ হবে না। শুধুমাত্র তাদের আদর্শিত পথেই দেশ পরিচালিত হলে এবং বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রকৃত অর্থে বাস্তবায়িত হলে কেবল তাদের রক্তের ঋণ পরিশোধ যোগ্য।
লেখক ও কলামিস্ট সাংবাদিক অজিত সরকার বলেন, জেলহত্যাকান্ডে মূল পরিকল্পনায় ছিলেন মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। তিনি সেনাবাহিনীর উর্ধতন পদে থেকেও সেদিনের ঘটনা দমনে কোন ভূমিকা রাখেননি। বরং তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সেনা অফিসারদের হত্যাকান্ডে মদদ যুগিয়েছেন। সেদিন জিয়াউর রহমান তার পবিত্র দায়িত্ব কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করলে ও সেনাবাহিনীর মধ্যে শৃঙ্খলা আনয়ন করলে জেল হত্যাকান্ডের মতো জঘন্যতম হত্যাকান্ড সংঘঠিত হতো না।
সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান বলেন, কলঙ্কিত জেল হত্যাকান্ড আমাদের জাতীয় জীবনের আরেকটি বেদনাদায়ক দিন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে এদেশ থেকে মুছে ফেলার জন্য এবং স্বাধীনতাকে অর্থহিন করার জন্যে এদেশে কুলাঙ্গার ও স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি মিলে জেল হত্যার মতো নিষ্ঠুর হত্যাকান্ড চালায়। বিশ্বের ইতিহাসে এ এক চরম নিন্দনীয় অপরাধ।
সভাপতির বক্তব্যে মাহবুব উদ্দিন বীর বিক্রম বলেন, জাতীয় চার নেতা মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রেখেছেন। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে জাতীয় চার নেতা মুজিবনগর সরকারের দায়িত্ব ও কর্তব্য সঠিকভাবে পালন করেছেন এবং প্রবাসী সরকারের নেতৃত্বে যে মহান মুক্তিযুদ্ধ পরিচলিত হয়েছিল তার সফল পরিসমাপ্তির মাধ্যমে আজকের স্বাধীন এই বাংলাদেশ। জাতি চিরদিন জাতীয় চার নেতার অবদান শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার হত্যাকান্ডের মাধ্যমে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ও তাদের আন্তর্জাতিক দোষররা বাংলাদেশকে আবার মিনি পাকিস্তান বানানোর পরিকল্পনা নিয়েছিল। তাদের সেই স্বপ্ন আজ ধুলিসাৎ হয়েছে। দীর্ঘ ২১ বছর পর বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ পরিচালিত হচ্ছে এবং মুক্তিযুদ্ধের আশা-আকাঙ্খা পূরণে জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রাণপন কাজ করে যাচ্ছেন। দেশ আজ বিশ্ব সভায় উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে সমাদৃত। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু হত্যা ও জেল হত্যার বিচার হয়েছে। দেশ আজ কলঙ্কমুক্ত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, সোনালী ব্যাংক বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাবেক সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট মেম্বার মোঃ নাসির উদ্দিন, জনতা ব্যাংক বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার, বঙ্গবন্ধু পরিষদ বাংলাদেশ ব্যাংক শাখার সভাপতি নেছার আহমেদ ভূইয়া, সোনালী ব্যাংক বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এস এম লুৎফর রহমান, বেসিক ব্যাংক বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ড. শংকর তালুকদার, জনতা ব্যাংক বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন, বিএডিসি বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি কৃষিবিদ মোঃ আজাহারুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা জালাল উদ্দিন আহমেদ তুহিন, কেরানীগঞ্জ বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম মেহেদী হাসান, রূপালী ব্যাংক বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি সুজাত আলী জাকারিয়া, আইসিবি বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আলাউদ্দিন, কলাবাগান থানা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি এস এম ওহিদুজ্জামান (মিন্টু)। এছাড়াও বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয়, মহানগর, বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও থানা কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা এস এ মালেক অসুস্থতাজনিত কারণে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন।
রিপোর্টঃ আনন্দ কুমার সেন, ঢাকা ।
Hi there very nice site!! Man .. Excellent .. Amazing .. Sheryl Isak Florette