গত ১৮ ফেব্রুয়ারী সোমবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদের উদ্যোগে অমর একুশে মহান শহীদ দিবস ও আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০১৯ পালন উপলক্ষে এক আলোচনা সভা সংগঠনের সভাপতি আব্দুর রব ভূইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুল হক স্বাগত বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ডা. এস এ মালেক। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফীন সিদ্দিক, মুহাম্মদ শফিকুর রহমান-এমপি, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আশফাক হোসেন, বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা মতিউর রহমান লাল্টু, বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রকৌশলী মাইনুর রহমানসহ সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. এস এ মালেক বলেন, বঙ্গবন্ধু জাতীয়তাবাদী নেতা ছিলেন। তিনি সব সময় অধিকারহারা বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন। জীবনের মূল্যবান সময় বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করতে গিয়ে কারাবরণ করেছেন। তাঁর জীবনের একমাত্র স্বপ্ন ছিল বাঙালির জন্য পৃথক আবাসভূমি। তিনি ভাষার জন্যও সংগ্রাম করেছেন। বঙ্গবন্ধু বাঙালির শ্রেষ্ঠ সন্তান এ কারনেই তিনিই একমাত্র নেতা যিনি বাঙালির জাতিস্বত্ত্বা, জাতীয়তাবাদে রূপান্তর করে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন। আজও দুঃখ লাগে স্বাধীনতার এত বছর পরেও বাঙালি ও বাংলাদেশী পরিচয়ে আমাদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। তিনি বাঙালি হিসেবে নাগরিকত্বের স্বীকৃতিদানের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট অনুরোধ জানান।
সংসদ সদস্য মুহাম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, ১৯৪৭ সালে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন শুরু হয়। বঙ্গবন্ধু ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন ও জেল খেটেছেন। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন আমাদের সর্বপ্রথম অধিকার সচেতন করে তোলে। ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই আমাদের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। বাঙালির আন্দোলন-সংগ্রামে বাংলাভাষা আন্দোলন অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে, শক্তি ও সাহস দিয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আজও আমরা শিক্ষার সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলন করা এবং মায়ের ভাষার প্রতি যথার্থ সম্মান প্রদর্শন করতে পারছি না। এটা আমাদের জন্য চরম লজ্জার ও ব্যর্থতার। সুতরাং কঠোর আইন তৈরীর মাধ্যমে বাংলাভাষার সম্মান ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, আজকাল মিডিয়াতে বাংলাভাষার কুরুচিপূর্ণ উক্তি ও বিকৃতিভাবে উপস্থাপন করা হয়। এগুলো বন্ধে সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। ড. আ আ ম স আরেফীন সিদ্দিক বলেন, পৃথিবীতে একটি মাত্রই জাতি আছে, যারা মায়ের ভাষা রক্ষার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। ভাষা সংগ্রামীদের এইসব আত্মত্যাগ কোনোদিন বৃথা হবে না। একুশের চেতনা অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ভাষাসংগ্রামীদের প্রতি যথার্থ সম্মান প্রদর্শন করা সম্ভব।
অধ্যাপক ড. আশফাক হোসেন বলেন, ভাষা আন্দোলনের রাজনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম। ভাষা আন্দোলনই আমাদের অধিকার সচেতন করে তোলে এবং অনুপ্রেরণা যোগায়। সুতরাং ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই আমরা মহান স্বাধীনতা পেয়েছি।
আনন্দ কুমার সেন, ঢাকা।